চুল- চেরা বিশ্লেষণ !
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’ কবি এই লাইনটি দিয়ে কোন নারীর চুলের সৌন্দর্যকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু নারীরাই শুধু নয় পুরুষরাও চুলের ব্যাপারে বেশ যত্নশীল। আর এই চুল নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। মানুষের মাথার চুল কেন সবসময় বাড়তে থাকে, চুল থাকা সত্ত্বেও কেন আমাদের মাথা ঠাণ্ডা থাকে! এরকম হাজারো প্রশ্ন মাথায় সবসময় ঘুরে ফিরে আসে।
আসুন আজ জেনে নিই চুল নিয়ে কিছু মজার তথ্য-
চুল বা লোম হচ্ছে ত্বকের বহিঃস্তরে অবস্থিত ফলিকল থেকে উৎপণ্ণ হওয়া চিকন লম্বা সুতোর মতো প্রোটিন তন্তু।
চুলের প্রধান উপাদান হচ্ছে কেরাটিন। মানুষ ব্যতীত অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর শরীরে যে নরম সুন্দর চুল পাওয়া যায় তাকে “ফার” বা লোম বলে।
ত্বকের উপরিতলের কোষ বা এপিডারমাল সেল থেকে চুলের উৎপত্তি। হেয়ার ফলিকল তৈরি হয় এপিডারমাল সেল থেকে। হেয়ার ফলিকনের একেবারে গভীরতম অংশ বা হেয়ার বালবের বিভাজনে তৈরি হয় নতুন নতুন কোষ। এই নবীন কোষগুলোতে বিশেষ ধরনের প্রোটিন জমতে থাকে, যা ত্বকের সাধারণ প্রোটিন থেকে কিছুটা আলাদা ও শক্ত।
মানুষের মাথায় আছে অসংখ্য চুল। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাথায় প্রায় ১,০০,০০০ চুল থাকে। মানুষের চুল প্রতিদিন ০.৫ মিমি বৃদ্ধি পায়। ২৪ ঘন্টায় মাথার চুল সমানভাবে বাড়েনা। রাতে চুল খুব ধীরে বাড়ে। সকালে এর গতি বাড়তে থাকে। বেলা ১০টা -১২টার মধ্যে চুল সবচেয়ে বেশি বাড়ে। দুপুরের দিক এ চুল বাড়ার গতি কমতে থাকে, আবার বিকেল এর দিক আবার বাড়ে এবং সন্ধ্যায় গতি কমতে থাকে।
গরমকালে চুল সবচেয়ে দ্রুত বাড়ে এবং ঝরে। দৈনিক কিছু চুল স্বাভাবিকভাবে পড়ে যায় এবং একইভাবে কিছু চুল জন্মায়। কিন্তু চুল পড়া ও চুল জন্মানোর হারের সমতা যখন থাকে না তখনই চুল পাতলা হতে শুরু করে।
দিনে প্রায় ১০০টার মত চুল পড়লে তা স্বাভাবিক। অনেকরকম ইনফেকশন, বিভিন্ন রোগ, ওষুধের ব্যবহার এবং খাদ্যের ভিন্নতার কারণে সাধারণত চুল পড়ে। তবে ৯৫ ভাগ চুল পড়ার কারন জিনগত বা বংশগত। এ অবস্থাকে বলা হয় অ্যানড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া এবং অ্যানড্রোজেন অর্থাৎ পুরুষ হরমোন এ সমস্যার জন্য দায়ী। এ কারণেই ছেলেদের চুল বেশি ঝরে। বৃদ্ধ বয়সে চুল ঝড়ার হার বেশি।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর